মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রামের
অন্যতম স্থপতি, সিপিবি’র সাবেক সাধারণ
সম্পাদক, জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের ২৮তম
মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৯ অক্টোবর। ১৯৮৭ সালের ৯ অক্টোবর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের
রাজধানী মস্কোতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আজ
৯ অক্টোবর কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের
কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা
হয়েছে।এই মহান নেতার স্মৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ ৯ অক্টোবর
সকাল ৮ টায় বনানী কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে সিপিবিসহ বিভিন্ন দল-সংগঠনের পক্ষ থেকে
পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে।আজ বিকেল ৪টায় দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে
কেন্দ্রীয়ভাবে কমরেড মণি সিংহ সড়কস্থ মুক্তিভবনের প্রগতি
সম্মেলন মিলনায়তন কমরেড ফরহাদ স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।এছাড়া কমরেড
মোহাম্মদ ফরহাদের জন্মস্থান পঞ্চগড়ের বোদায় আজ বিকেল ৩টায় সিপিবি’র উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।জনসভায় অতিথি হিসেবে সিপিবি’র কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমরেড মনজুরুল আহসান খান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য
আলতাফ হোসাইন বক্তব্য রাখবেন।
কমরেড ফরহাদ ১৯৩৮ সালের ৫ জুলাই পঞ্চগড়ের বোদায় জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র মোহাম্মদ
ফরহাদ মহান ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ে প্রথম
সারির নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহুবার জেল, জুলুম, হুলিয়া, নির্যাতন
ভোগ করেন। ৩৫ বছরের ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবনে তিনি পাকিস্তান আমল এবং স্বাধীন
বাংলাদেশে জিয়া-এরশাদের আমলে কারাবরণসহ দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর আত্মগোপন বা
কারান্তরালে ছিলেন। ’৫৪ সালে তাকে গ্রেফতার করে
পাকিস্তানের কুখ্যাত নিরাপত্তা আইনে বিনা বিচারে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক
রাখা হয়। ’৫৫ সালে ১৭ বছর বয়সে মোহাম্মদ ফরহাদ কমিউনিস্ট
পার্টির সদস্য পদ লাভ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় কমরেড ফরহাদ ’৫৯ সাল থেকে গোপনে ছাত্রদের সংগঠিত করতে থাকেন। ১৯৬২ সাল থেকে প্রায় এক
বছর হুলিয়া মাথায় নিয়ে গোপনে ছাত্র গণআন্দোলন সংগঠন ও শ্রমিক শ্রেণীর পার্টির
বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।৬২’র
শিক্ষা আন্দোলনের মস্তিস্ক বলা হয় কমরেড মোঃ ফরহাদকে। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে কমরেড ফরহাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে
কমিউনিস্ট পার্টি-ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ গেরিলা বাহিনীর প্রধান
সংগঠক ছিলেন তিনি।১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের ক্ষমতা দখলের পর সামরিক শাসনবিরোধী
রাজনৈতিক ঐক্য তথা ১৫ দলীয় ঐক্যজোট গঠন; জাতীয় দাবি ৫ দফা
প্রণয়ন ও যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি বলিষ্ঠ ও অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেন। ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পঞ্চগড়-২
(বোদা-দেবীগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
No comments:
Post a Comment