মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে
ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ১৮
সেপ্টেম্বর ইউজিসির সহকারী পরিচালক ওমর
সিরাজকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা
হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার
সন্ধ্যায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট
হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।র্যাব দাবি করেছে, বিকালে
বুকে ব্যথা অনুভব করলে
ওমর সিরাজকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার
মৃত্যু হয়।শুক্রবার
দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে
তার লাশ গ্রহণ করেন
পরিবারের সদস্যরা। সেখানে ওমরের স্ত্রী
সাবিনা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের কাছে তার স্বামীর
মৃত্যুর জন্য র্যাবকে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, র্যাব তাকে রিমান্ডে নেওয়ার পরপরই আমরা
ভীত ছিলাম। তার সঙ্গে
আমাদেরকে দেখা করতেও দেয়নি
র্যাব।”২৯ সেপ্টেম্বর
আদালতে হাজির করে রিমান্ডের
আবেদনের সময় নিজের ‘বুকের
ব্যথার কথা’ ওমর র্যাবকে জানিয়েছিলেন বলে সাবিনার দাবি।“তখন
রিমান্ড আবেদন বাতিল করে
তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে আদালতের কাছে
আবেদন করা হয়েছিল। কিন্ত
আদালত তা নাকচ করে
দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।”ওমর সিরাজের ভাই
আশরাফ উদ্দীন দাবি, তার
ভাইকে ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যা’ করা হয়েছে।ওমরের
মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার রাতেই
তার মরদেহ মর্গে নেওয়া
হয়। সেখানে লাশের সুরতহাল
প্রতিবেদন তৈরি করেন শেরে
বাংলা নগর থানার এসআই
ওয়াজেদ আলী।
সুরতহাল প্রতিবেদনে লাশের ডান কাঁধের
পাশে পিঠের দিকে লম্বা
বরাবর কালো দাগ রয়েছে
এবং বাম পায়ের গোড়ালিতে
ফোলা জখম রয়েছে বলে
উল্লেখ করা হয়েছে।এছাড়া লাশের ডান
হাতের কনুই ও বাম
হাতের কব্জিতে ক্ষত চিহ্ন পাওয়া
গেছে, যেগুলোকে সুরতহাল প্রতিবেদনে ‘পুরনো’ বলা হয়েছে।তবে
‘এসব ক্ষত চিহ্ন’ মৃত্যুর
কারণ নয় বলে প্রাথমিকভাবে
ধারণা করছেন ময়নাতদন্ত সংশ্লিষ্ট
ডা. সোহেল মাহমুদ।
ডা. সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “নিহতের হার্ট
বড় ছিল; শ্বাসপ্রশ্বাসে তার
কষ্ট ছিল। এরপরেও সব
পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ
সবের প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই মৃত্যুর
প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”তবে ‘নির্যাতনে ওমর
সিরাজের মৃত্যু হয়েছে’ স্বজনদের
এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন
র্যাবের গণমাধ্যম
শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।তিনি
বলেন, “তাকে (ওমর সিরাজ)
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় করা
মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা
হচ্ছিল।“এরই
এক পর্যায়ে তিনি অসুস্থতার কথা
বললে তাকে যথারীতি ‘সংশ্লিষ্ট’
হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।”
“ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই পরবর্তী
করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ওমর সিরাজ রাজধানীর মিরপুরের
পীরেরবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায়
সপরিবারে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি
যশোরের শার্শার সুরাবগোপ এলাকায়।
মেডিকেল ভর্তি
পরীক্ষার দিন ইউজিসিতে অভিযান
চালিয়ে ওমর ছাড়াও বাংলাদেশ
জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের স্টোর কিপার রেজাউল
করিম (৩২) এবং ঈশান
ইমতিয়াজ হৃদয় নামে ২২
বছর বয়সী এক তরুণকে
গ্রেপ্তার করা হয়।তাদের গ্রেপ্তারের পর
মুফতি মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন,
সিরাজই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা এবং
কৃষি ব্যাংক, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন ও বিভিন্ন
সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষার হলে
‘উত্তরপত্র বিতরণকারী’ চক্রের হোতা।প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে
গ্রেপ্তার হওয়ায় দিনই ওমর
সিরাজকে সাময়িক বরখাস্ত করে
ইউজিসি কর্তৃপক্ষ।
No comments:
Post a Comment